Next
Previous
0

সম্পাদকীয়

Posted in






অনেকদিন পর্যন্ত দিনটির অস্তিত্ব সন্ধান করতে পঞ্জিকার সাহায্য নিতে হতো অথবা হালখাতায় পাওয়া বাংলা ক্যালেন্ডারের বৈশাখ মাসের এই তারিখটির তলায় দেওয়া থাকতো দিনটির বিশেষ তাৎপর্যের সূত্র। এইমাত্র।

সত্যি কথা বলতে কী, হিন্দু পুরাণের আরেক মহানায়ক কৃষ্ণের জন্মদিনটি বরং উদযাপিত হয়ে এসেছে অনেক বর্ণাঢ্যরূপে। সেই বিচারে রাম যেন ছিলেন একটু ব্রাত্য। অন্তত বঙ্গদেশে তো বটেই। সে অবশ্য প্রাক অযোধ্যাপর্বে। রাম তখনও রাজনীতির ধারালো হাতিয়ার হয়ে ওঠেননি। বড় জোর বাঙালি সমাজ ঈষৎ দ্বিধাবিভক্ত ছিলেন মধুসূদন-রচিত 'মেঘনাদবধ কাব্য' নিয়ে, যেখানে মহাকাব্যের এই নায়ককে 'আপন মনের মাধুরী মিশায়ে' অন্য চেহারায় হাজির করেছিলেন বিরল গোত্রের সেই স্রষ্টা।

কিন্তু সে ছিল সম্পূর্ণ বৌদ্ধিক এক শ্রেণীবিভাজন, যা নিয়ে তর্কের তুফান উঠলেও কখনও শোনা যায়নি অস্ত্রের ঝনঝনা!

অযোধ্যাকান্ডের পর সুকুমারী ভট্টাচার্য শাণিত এক নিবন্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন, কোন রামরাজ্যের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা? সর্বতোভাবে তা কাঙ্খিত তো?

সেই লেখা প্রকাশিত হওয়ার পর কেটে গেছে তিনটি দশক। ভারতবাসী হিসাবে নিজেকে এর চেয়ে বিপন্ন কখনও মনে হয়েছে কি? সাম্প্রদায়িকতার যে বিষবৃক্ষটি সেদিন রোপিত হয়েছিল, আজ সেটি পূর্ণবয়স্ক। প্রতিনিয়ত এটি থেকে নির্গত দূষিত বাতাস গ্রাস করে নিচ্ছে সমগ্র চরাচর। রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে হাত ধরাধরি করে সেই কলুষমণ্ডলে শোভাযাত্রায় মগ্ন।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।